জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন কট্টরপন্থী নেত্রী সানায়ে তাকাইচি

0
6

বিশেষ রাজনৈতিক প্রতিবেদক: কট্টরপন্থী নেত্রী সানায়ে তাকাইচি অতীতে মেটাল ড্রামার ছিলেন। যৌবনে বাইকে চেপে সফরও করতেন। সানায়ে তাকাইচি হতে চলেছেন জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী। শাসক দল লিবারাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি) তাঁকেই নতুন নেত্রী নির্বাচিত করেছে। ব্রিটেনের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের ভক্ত সানায়েই হবেন এশিয়ার এই দেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী। যদিও ৬৪ বছরের এই নেত্রীর উত্থানে খুব একটা খুশি নন সে দেশের মহিলারাই। কারণ, সানায়ে অতীতে মহিলাদের হিতার্থে সংস্কারমূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ, বিলের বিরোধিতা করেছেন। শাসকদলের অন্যতম কট্টরপন্থী সদস্য বলেই পরিচিত তিনি।
গত মাসেই জাপানের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন শিগেরু ইশিবা। গত এক বছর ধরে এলডিপির মধ্যে ইশিবাকে নিয়ে অসন্তোষ দেখা দেয়। গত জুলাইয়ে জাপান পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পরই প্রশ্নের মুখে পড়ে ইশিবার শাসনব্যবস্থা। শুধু বিরোধীদের মধ্যে নয়, দলের মধ্যেও ইশিবার পদত্যাগের দাবি ওঠে। এ বার এলডিপি সানায়েকে নেত্রী নির্বাচন করল। তাঁর সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব মেটানো। সেই সঙ্গে জাপানের মন্থর অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে মূল্যবৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে সানায়েকে।
তবে তারও আগে সানায়ের বড় পরীক্ষা জাপানের মহিলাদের সমর্থন আদায়। তিনি প্রধানমন্ত্রী হলে খুব একটা খুশি হবেন না সে দেশের মহিলাদের বড় অংশ। কট্টরপন্থী হওয়ার পাশাপাশি সানায়ে ‘পুরুষতান্ত্রিক’ বলে পরিচিত। অতীতে জাপানে মহিলাদের উন্নয়নের জন্য যে যে পদক্ষেপ করা হয়েছে বা বিল আনা হয়েছে, তার বিরোধিতা করেছেন সানায়ে। তিনি মনে করেন, মেয়েদের সবার আগে ভাল স্ত্রী ও মা হওয়া উচিত। এ ক্ষেত্রে তাঁর দল এলডিপিরও একই মত। সমকামীদের মধ্যে বিয়ের বিরোধিতা করেন তিনি। মহিলাদের স্বামীর পরিবর্তে বাবার পদবি ব্যবহার করার বিরুদ্ধেও সরব হয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, স্বামী-স্ত্রীর আলাদা পদবি জাপানের সংস্কৃতির বিরোধী।
সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেস বলছে, সানায়ের দল এলডিপিতে মহিলাদের মন্ত্রী বা শীর্ষ পদে তুলনামূলক কমই বসানো হয়। তা ছাড়া সানায়েও দলের পুরুষ শীর্ষনেতাদের প্রতিই বেশি অনুগত। জাপানের মহিলাদের একাংশের উদ্বেগ, এর ফলে তাঁদের অধিকারের লড়াই, উন্নয়ন সংক্রান্ত বিল বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে। যদিও কিছু ক্ষেত্রে নিজের পরিচিত খোলস ছেড়ে বেরিয়ে মহিলাদের হয়েও কথা বলেছেন সানায়ে। নিজের মেনোপজ়ের সমস্যা নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছিলেন তিনি। মহিলাদের স্বাস্থ্যের বিষয়ে পুরুষদের শিক্ষাদান করা নিয়েও সরব হয়েছিলেন তিনি। কট্টরপন্থী এই নেতা অতীতে মেটাল ড্রামার ছিলেন। যৌবনে বাইকে চেপে সফরও করতেন।
এখন সেই সানায়েই জাপানে কড়া অভিবাসন নীতি চালু করার পক্ষে সওয়াল করেছেন। দেশে সামরিক বাহিনী শক্তিশালী করার কথাও বলেছেন। তিনি স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছেন যে, জাপানের উন্নয়নের জন্য তিনি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিঞ্জো আবের দেখানো ‘রক্ষণশীল’ পথেই চলবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here