
-
“২০২২ সালে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ১৮.৭ শতাংশ থেকে বেড়ে চলতি বছরে প্রায় ২৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, অর্থাৎ গত তিন বছরে দেশে দারিদ্র্য বেড়েছে। একই সময়ে, অতিদারিদ্র্যের হারও ৫.৬ শতাংশ থেকে ৯.৩৫ শতাংশে পৌঁছেছে। এই বৃদ্ধি কভিড, মূল্যস্ফীতি ও রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মতো বিভিন্ন সংকটের কারণে হয়েছে”
বি এম শফিকুল ইসলাম টিটু, সিনিয়র চীফ রিপোর্টার (বাংলাদেশ): বাংলাদেশের দারিদ্র্যের হার ২০২৪ সালের তুলনায় শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে চলতি বছর ২১ দশমিক ২ শতাংশে পৌঁছবে, যা কভিড-পরবর্তী সময় তথা গত চার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। বাংলাদেশের দারিদ্র্যের হার ২০২৪ সালের তুলনায় শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে চলতি বছর ২১ দশমিক ২ শতাংশে পৌঁছবে, যা কভিড-পরবর্তী সময় তথা গত চার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। প্রতিবেদনে দেশের শ্রমবাজারের দুর্বল চিত্র উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, ২০২৩ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের হার ৬০ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে ৫৮ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে এসেছে। অর্থাৎ দেশে কর্মক্ষম জনশক্তির মধ্যে যারা কর্মে নিয়োজিত ছিলেন তাদের মধ্যে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে। যার মধ্যে প্রায় ২৪ লাখই নারী। এ পরিস্থিতিতে কর্মসংস্থান ও কর্মক্ষম জনসংখ্যার অনুপাত ২ দশমিক ১ শতাংশীয় পয়েন্ট কমে ৫৬ দশমিক ৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
দারিদ্র্যতার হার বৃদ্ধি: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে দারিদ্র্যের হার ছিল ১৮.৭ শতাংশ, যা ২০২৫ সালে এসে প্রায় ২৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
অতিদারিদ্র্য বৃদ্ধি: ২০২২ সালে অতিদারিদ্র্যের হার ছিল ৫.৬ শতাংশ, যা ২০২৫ সালে বেড়ে ৯.৩৫ শতাংশে পৌঁছেছে।
কারণসমূহ: এই বৃদ্ধি কভিড (২০২০-২২), মূল্যস্ফীতি এবং রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে ঘটেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ঝুঁকিপূর্ণ পরিবার: গবেষণা বলছে, এখনও প্রায় ১৮ শতাংশ পরিবার যে কোনো সময় দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যেতে পারে। এর ফলে, নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের মাসিক আয় ব্যয়ের তুলনায় বেশি হওয়ায় তারা ধারদেনা করে সংসার চালাচ্ছে।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী: ২০২৪ সালে দারিদ্র্যের হার ছিল ২০ দশমিক ৫ শতাংশ; ২০২৩ সালে ১৯ দশমিক ২ এবং ২০২২ সালে ছিল ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। তবে পরিকল্পিত অর্থনৈতিক সংস্কার কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন, ব্যাংক খাত পুনর্গঠন, বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণ, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রেমিট্যান্স প্রবাহ বজায় রাখা এবং নীতিগত স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা গেলে ২০২৬ ও ২০২৭ সালে অর্থনীতি স্থিতিশীল হবে এবং দারিদ্র্যের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে বলেও জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
এর আগে দেশে দারিদ্র্য বাড়ার তথ্য দিয়েছিল বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) ও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। চলতি বছরের জানুয়ারিতে বিবিএসের দেয়া তথ্য অনুযায়ী দারিদ্র্যের হার ১৯ দশমিক ২ শতাংশ। ২০২২ সালে খানা আয়-ব্যয় জরিপ অনুযায়ী দেশের দারিদ্র্যের হার ছিল ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। অন্যদিকে পিপিআরসির সমীক্ষায় উঠে এসেছে দেশের দারিদ্র্য বেড়ে ২৭ দশমিক ৯৩ শতাংশে পৌঁছেছে। ২০২২ সালে এ হার ছিল ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। সংস্থাটির সমীক্ষায় অতিদারিদ্র্যের হার ২০২২ সালে ছিল ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। ২০২৫ সালে তা বেড়ে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার তিন বছরে ব্যাপক বেড়েছে। চলতি বছর তা ২৭.৯৩ শতাংশে পৌঁছেছে। তিন বছর আগে ২০২২ সালে দারিদ্র্যের হার ছিল ১৮.৭ শতাংশ। অর্থাৎ দেশে প্রতি চারজনে একজন এখন দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে।
অর্থাৎ এখন প্রতি ১০ জনের একজন চরম দারিদ্র্যে ভুগছে। এ ছাড়া প্রায় ১৮ শতাংশ মানুষ এমন অবস্থায় আছে, যেকোনো সময় তারা দারিদ্র্যের মধ্যে পড়ে যেতে পারে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এলজিইডি মিলনায়তনে এ গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। ‘ইকোনমিক ডায়নামিকস অ্যান্ড মুড অ্যাট হাউসহোল্ড লেভেল ইন মিড ২০২৫’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান।
অর্থাৎ শহরে আয় কমলেও খরচ বেড়েছে। অন্যদিকে গ্রামের পরিবারে কিছুটা ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। ২০২২ সালে যেখানে মাসিক গড় আয় ছিল ২৬ হাজার ১৬৩ টাকা, বর্তমানে তা বেড়ে ২৯ হাজার ২০৫ টাকা হয়েছে। তবে আয় সামান্য বাড়লেও জাতীয়ভাবে সঞ্চয়ের কোনো সুযোগ নেই বললেই চলে।
পরিবারের খরচের বড় অংশই চলে যাচ্ছে খাবারের পেছনে। গবেষণা বলছে, একটি পরিবারের মাসিক খরচের প্রায় ৫৫ শতাংশ ব্যয় হয় শুধু খাদ্যে। গড়ে একটি পরিবার খাবার কেনায় খরচ করছে ১০ হাজার ৬১৪ টাকা। এর বাইরে শিক্ষায় এক হাজার ৮২২ টাকা, চিকিৎসায় এক হাজার ৫৫৬ টাকা, যাতায়াতে এক হাজার ৪৭৮ টাকা এবং আবাসনে প্রায় এক হাজার ৯০ টাকা ব্যয় হয়। ফলে অন্যান্য খাতে খরচ করার বা সঞ্চয় রাখার সামর্থ্য পরিবারের হাতে থাকে না।
গবেষণায় দুর্নীতি ও ঘুষের চিত্রও উঠে এসেছে। বলা হয়, গত বছরের আগস্টের পর ঘুষ দেওয়ার প্রবণতা কিছুটা কমলেও তা বন্ধ হয়নি। আগস্টের আগে যেখানে ৮.৫৪ শতাংশ মানুষ সেবা নিতে গিয়ে ঘুষ দিয়েছেন। আগস্টের পর তা নেমে দাঁড়িয়েছে ৩.৬৯ শতাংশে। সবচেয়ে বেশি ঘুষ দিতে হয়েছে সরকারি অফিসে, এরপর পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতাদের দিতে হয়।
দারিদ্র্য বাড়ার কারণ হিসেবে পিপিআরসি বলছে, দেশে তিন ধরনের সংকট এখনো প্রভাব বিস্তার করছে। প্রথমত, কভিড-১৯ মহামারি (২০২০-২২), যা অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি করেছে। দ্বিতীয়ত, মূল্যস্ফীতি বা পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, যা মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমিয়ে দিয়েছে। তৃতীয়ত, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, যা বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে প্রভাব ফেলছে।
অনুষ্ঠানে হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, শুধু জিডিপি নিয়ে আলোচনা করলে চলবে না, এখন অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় মানুষের কল্যাণ, ন্যায়বিচার ও বৈষম্যহীনতাকে গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমান বাস্তবতায় পাঁচটি নতুন ঝুঁকিকে বিশেষভাবে বিবেচনায় নিতে হবে। দীর্ঘস্থায়ী রোগের বাড়তি চাপ, নারীপ্রধান পরিবারের দারিদ্র্য, ঋণের বোঝা বৃদ্ধি, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ও নিরাপদ স্যানিটেশনের ঘাটতি।
তিনি সতর্ক করেন, দেশে এখন কর্মসংস্থানের এক ধরনের সংকট বা ‘বেকারত্বের দুর্যোগ’ তৈরি হয়েছে। এ অবস্থা মোকাবেলায় এখনই বড় ধরনের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। কর্মসংস্থান বাড়ানো এবং সামাজিক নিরাপত্তা জোরদার না করলে দারিদ্র্য আরো গভীর হতে পারে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) ২০২৪ সালের এক ধারণা জরিপের তথ্য তুলে ধরে জানায়, দেশে দারিদ্র্যের হার এবং খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা আগের চেয়ে বেড়েছে। ২০২২ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) খানা আয় ও ব্যয় জরিপে দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ১৮.৭ শতাংশ। বিআইডিএসের ধারণা জরিপে এ হার হয়েছে ২৩.১১ শতাংশ। বিবিএসের জরিপে ২০২২ সালে গ্রামে দরিদ্র মানুষের হার ছিল ২০.৫ শতাংশ। বিআইডিএসের জরিপে দাঁড়িয়েছে ২৪.৭ শতাংশ।
দারিদ্র্যের হার বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘পাঁচ হাজার লোকের টেলিফোনে সাক্ষাৎকার নিয়ে বললেন দারিদ্র্য বেড়ে গেছে। এগুলো তো আমি জানি। তাত্ত্বিক দিকে এখন যাব না। দারিদ্র্য বেড়ে গেছে, দারিদ্র্য আছে—এগুলো বলতে হলে অনেক বক্তব্য দিতে হবে। আমি তো জানি কীভাবে ওরা দারিদ্র্য পরিমাপ করে।’
অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের একটি বক্তব্য তুলে ধরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘তিনি একবার বলেছিলেন, খুব কঠিন দারিদ্র্য আমার পরিমাপ করতে হবে না। দরিদ্র লোক দেখলেই চিনতে পারবেন, তার চেহারা, তার ভাবে।’
তবে দেশে দারিদ্র্য বৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের সংকটের কারণ হিসেবে বিশ্বব্যাংক বলছে, বর্তমানে উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং প্রকৃত মজুরি হ্রাস পরিবারগুলোকে আরো চাপে ফেলেছে। ক্রমাগত উচ্চ মূল্যস্ফীতি পরিবারের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস করেছে। এর প্রভাব সবচেয়ে তীব্র ছিল স্বল্প বেতনের শ্রমিকদের ওপর, যাদের প্রকৃত মজুরি ২০২৫ অর্থবছরে ২ শতাংশ কমেছে। দারিদ্র্যের হার ২০২৬ ও ২০২৭ সালে যথাক্রমে ১৯ দশমিক ১ শতাংশ এবং ২০২৭ সালে ১৮ দশমিক ১ শতাংশে নেমে আসতে পারে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও নীতিগত উদ্যোগগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধারের পথে এগোবে। ২০২৭ সালে প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে ত্বরান্বিত হবে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মূল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসা এবং প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি পেলে বেসরকারি খাতে ভোগ ব্যয় আরো সম্প্রসারিত হবে, যা সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে শক্তিশালী করবে।
তবে বিশ্বব্যাংক সতর্ক করেছে যে, এর পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া হবে অত্যন্ত নাজুক। এর সাফল্য নির্ভর করবে তিনটি মূল বিষয়ের ওপর। প্রথমত, পরিকল্পিত সংস্কারগুলো কতটা কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা যায়; দ্বিতীয়ত, ব্যাংক খাতকে কত দ্রুত পুনর্গঠিত করে স্থিতিশীল করা সম্ভব এবং তৃতীয়ত, দেশীয় ও বৈদেশিক অর্থনৈতিক পরিবেশ কতটা অনুকূল রাখা যায়। তবে চলতি বছরে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৮ শতাংশ হবে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এ জিডিপি প্রবৃদ্ধি, বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা এলে দারিদ্র্য কমতে পারে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক।
দেশে দারিদ্র্যের হার বাড়ার তথ্য যৌক্তিক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান বাড়ার যে প্রয়োজনীয়তা ছিল সেটি হচ্ছে না। গত এক বছরে বিনিয়োগ আসেনি। বিনিয়োগ ছাড়া কোনো দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হওয়ার সুযোগ নেই। এছাড়া দিন দিন বাড়ছে মূল্যস্ফীতি। যখন দেশের মূল্যস্ফীতি বাড়বে তখন নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে। আর দাম বাড়লে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাবে।
এ বিষয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, এখন যেহেতু বিনিয়োগ কম হচ্ছে, চাকরির সুযোগ কমেছে এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতি অনেক দিন ধরে চলছে—এ কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে, দারিদ্র্য বেড়েছে। বিশ্বব্যাংক বলেছে ভবিষ্যতে দারিদ্র্য কমবে ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে। তবে আনুষঙ্গিক কারণ বিবেচনা করলে দেখা যাবে মানুষের ওপর অর্থনৈতিক চাপ বেড়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনযাত্রার মান আরো নিচের দিকে যাচ্ছে। বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠী বেশি ভুগছে। মনে রাখতে হবে বিনিয়োগ না হলে কর্মসংস্থান তৈরি হবে না। ব্যবসাও প্রসারিত হবে না। এখন অনেকের ব্যবসার আকারই ছোট হয়ে আসছে। তাহলে তো তাদের আর লোক লাগবে না। ব্যবসা বাড়লে নতুন নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে। দারিদ্র্য কমে আসবে।’
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন নিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত এক সভায় সংস্থাটির সহসভাপতি ড. সাদিক আহমেদ বলেন, ‘দেশে বেকার ও অর্ধবেকার শিক্ষিত তরুণদের সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। দেশের সংস্কারের যে এজেন্ডা নেয়া হয়েছে সেখানে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে সতর্কতার সঙ্গে প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানে অগ্রাধিকার দেয়া প্রয়োজন।’
বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. ফ্রানজিস্কা ওনসর্জ বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতিকে রূপান্তরিত করতে উন্মুক্ত বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলাদেশের নীতিগত সংস্কারের মাধ্যমে কর্মীদের কার্যক্রম ও অবস্থানভেদে পুনর্বণ্টন সহজ করা গেলে উৎপাদনশীল খাতে সম্পদ প্রবাহ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করবে।’