
অভিজিৎ মূখার্জী, বিশেষ প্রতিবেদক, ভারত: ক্যাপসুলের ভিতর নিষিদ্ধ মাদক ভরে বিক্রি করার অপরাধে দুই ভারতীয়কে নিষিদ্ধ করল আমেরিকা। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি বাজেয়াপ্ত করা হল আমেরিকায় তাঁদের সমস্ত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তিও। জানা গিয়েছে, ওই দুই ব্যক্তির নাম সাদিক আব্বাস হাবিব সইদ এবং মোহাম্মদ ইকবাল শেখ। অভিযোগ, আমেরিকা জুড়ে লক্ষ লক্ষ নাগরিকের কাছে নিষিদ্ধ মাদক ভরা ‘ওষুধ’ বিক্রি করেছেন তাঁরা।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ওই দুই ভারতীয় অনলাইনে ওষুধ বিক্রি করতেন। ওষুধের ক্যাপসুলের ভিতর ভরা থাকত ফেন্টানিল এবং মেথামফেটামিনের মতো নিষিদ্ধ মাদক! সেই ‘ওষুধ’ পৌঁছে যেত মার্কিন নাগরিকদের কাছে। মার্কিন ট্রেজ়ারি বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সংস্থার নাম কেএস ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডার্স। অভিযুক্ত ইকবাল নিজে ওই ফার্মেসির মালিক।
অভিযোগ, সাদিক এবং ইকবাল মিলে ডমিনিকান প্রজাতন্ত্র এবং আমেরিকার মাদক পাচারকারীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নকল ওষুধ তৈরির কাজ করতেন। সেই ওষুধকে ছাড়যুক্ত, বৈধ ওষুধ হিসাবে বাজারজাত এবং বিক্রি করা হত। এর আগে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্কের একটি মাদক সংক্রান্ত মামলায় সাদিক ও ইকবালের নাম জড়ায়। তবে দু’জনের অপরাধমূলক কার্যকলাপ প্রকাশ্যে আসার পরেও কেএস ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডার্স সংস্থাটি বন্ধ হয়নি বলে দাবি। বরং দিব্যি রমরমিয়ে চলেছে তাদের ব্যবসা।
বিষয়টি নতুন করে প্রকাশ্যে আসার পরেই তৎপর হয়েছে মার্কিন প্রশাসন। আমেরিকায় ওই দুই ব্যক্তির সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। সমস্ত আমেরিকান সংস্থাকে তাঁদের সঙ্গে কোনও রকম ব্যবসায়িক লেনদেন করতে বারণ করা হয়েছে। নির্দেশ না মানলে ফৌজদারি শাস্তির ঝুঁকি রয়েছে বলেও সতর্ক করা হয়েছে তাদের। প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবারই ফেন্টানিল পাচারে জড়িত ভারতীয় ব্যবসায়ী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ভিসা বাতিল করেছে আমেরিকা। দিল্লিতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ওই ভারতীয়েরা নতুন করে ভিসার আবেদন করলেও প্রত্যাখ্যাত হবেন। অবশ্য বিবৃতিতে কারও নাম প্রকাশ করা হয়নি। তবে বলা হয়েছে, এই সিদ্ধান্তের ফলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও তাদের পরিজনেরা ভবিষ্যতে আমেরিকা ভ্রমণে যেতে পারবেন না। পাচারে জড়িত সংস্থাগুলির কর্ণধারদের জন্যও প্রযোজ্য হবে একই নিয়ম।